শুধুমাত্র খুলনা মেডিকেল কলেজ ও জেনারেল হাসপাতাল, জেলা ও উপজেলা হাসপাতালে পাঁচ বেডের ‘আইসোলেশন ইউনিট’ খোলা হয়েছে। আর মংলা বন্দরে বসানো হয়েছে একটি ইলেক্ট্রিক্যাল বিলবোর্ড। এর মাধ্যমে করোনাভাইরাসের লক্ষণ জানার পাশাপাশি এ রোগ থেকে প্রতিকারের উপায় সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করা সম্ভব হবে।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এটিএমএম মোর্শেদ জানান, এ হাসপাতালে ২৮ জানুয়ারি থেকে পাঁচ শয্যার একটি ওয়ার্ড প্রস্তুত করা হয়েছে। তবে লক্ষণ দেখে রোগী ভর্তি করা হলেও এখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার কোনও সুযোগ নেই। সন্দেহ হলে সংশ্লিষ্ট রোগীকে ঢাকায় রেফার্ড করতে হবে।
ওয়ার্ডটির দায়িত্বে থাকা হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. এসএম কামাল বলেন, হাসপাতালের গ্যাস্ট্রোলজি বিভাগের পাশের একটি ওয়ার্ডে পাঁচটি বেড প্রস্তুত করা হয়েছে। সেখানে আগে ডেঙ্গু ওয়ার্ড ছিল। ওই ওয়ার্ডটির জন্য একজন সহকারী রেজিস্ট্রার এবং একজন নার্সকে দায়িত্ব দিয়ে আরও কিছু জনবল পদায়ন করা হচ্ছে।
এদিকে মারাত্মকভাবে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবকে বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা হিসেবে ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। ঠিক কীভাবে ভাইরাসটি ছড়াচ্ছে এবং এটি কতটা মারাত্মক, তা বোঝার জন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত চীনে ১৭০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে সাত হাজার ৮০০ জনের বেশি মানুষ। চীনের বাইরে ১৮টি দেশে এমন ভাইরাসের অস্তিত্বের খবর পাওয়া গেছে, যাদের বেশির ভাগই চীনের উহান রাজ্য থেকে আসা।
খুলনার সিভিল সার্জন ও জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সুজাত আহমেদ বলেন, হাসপাতালের পৃথক ওয়ার্ডে ডিউটিকালীন চিকিৎসক-নার্সদের মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। উপজেলা হাসপাতালেও এমন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: করোনাভাইরাস: বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা
তবে তিনি বলেন, নতুন এ ভাইরাসটির পরীক্ষা-নিরীক্ষার কোনো ব্যবস্থা খুলনায় নেই। ফলে লক্ষণ দেখে সন্দেহভাজন কোনো রোগী পাওয়া গেলে তাকে ঢাকার মহাখালীর আইইডিসিআর অথবা কুর্মিটোলা হাসপাতালে পাঠানো হবে।
করোনাভাইরাসের বিষয়ে রূপসা উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এসএম তারেক উর রহমান বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনার আলোকে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। কোন রোগীর লক্ষণ দেখে সন্দেহ হলে তাকে পৃথক বেডে রাখা হবে।
তেরখাদা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. রাফিদ শাহরিয়ার বলেন, করোনাভাইরাস সম্পর্কিত লিফলেট করা হয়েছে, যা গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহে লাগানো হচ্ছে। এ বিষয়ে সতর্কবার্তা দিয়ে ব্যানারও তৈরি করা হচ্ছে।
ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শেখ মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, পাঁচ বেডের পৃথক ওয়ার্ড ২৯ জানুয়ারি চালু করা হয়েছে।
এদিকে খুলনাস্থ মংলা পোর্ট হেলথ অফিসার ডা. সুফিয়া খাতুন বলেন, মংলা পোর্ট কেন্দ্রিক সতর্কতা বাড়ানো হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে একটি ইলেক্ট্রিক্যাল বিলবোর্ড দেয়া হয়েছে। যেটি মোংলা বন্দর গেটে ২৮ জানুয়ারি স্থাপন করা হয়েছে।